আল কুরআনে যে রুকু আছে বিভিন্ন জায়গায় শরীয়তে এর সঠিক বিধান কী বিস্তারিত জানালে ভালো হতো।
**রুকু (Ruku')** হলো কুরআন তিলাওয়াত বা নামাযের সময় একটি বিশেষ দৈহিক অবস্থান যেখানে ব্যক্তি কোমর থেকে ঝুঁকে হাত দুটি হাঁটুতে রাখে। এটি নামাযের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুকন (স্তম্ভ) এবং কুরআন তিলাওয়াতের সময়ও প্রয়োগ করা হয়। শরীয়তে রুকুর বিধান নিম্নরূপ:
### **১. নামাযে রুকুর বিধান**
- **ফরজ:** প্রত্যেক রাকাআতে রুকু করা ফরজ। রুকু না করলে নামায শুদ্ধ হয় না।
**(সূরা আল-হাজ্জ ২২:৭৭, সূরা আল-বাকারাহ ২:৪৩)**
- **শর্তসমূহ:**
- কোমর থেকে এতটা ঝুঁকতে হবে যাতে হাত হাঁটু স্পর্শ করে।
- কমপক্ষে একবার "সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম" বলা ওয়াজিব।
- রুকুতে স্থিরতা অবলম্বন করা (তামানিনাহ) ওয়াজিব।
- **সুন্নত পদ্ধতি:**
- রুকুতে গিয়ে "সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম" (মিনিমাম ৩ বার) বলা।
- পিঠ সমতল রাখা এবং মাথা না ঝুঁকানো বা না উঁচু করা।
- হাঁটু সোজা রাখা ও আঙ্গুলগুলো ফাঁক করে হাঁটু ধরা।
### **২. কুরআন তিলাওয়াতে রুকু**
কুরআন তিলাওয়াতের সময় রুকু করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, তবে কিছু স্থানে **সিজদায়ে তিলাওয়াত** (তিলাওয়াত সিজদা) করার নির্দেশ আছে।
- **সিজদার আয়াত:** কিছু আয়াত তিলাওয়াত করলে সিজদা করা সুন্নাত (যেমন—সূরা আল-আলাআ ৮৭:১৯, সূরা আন-নাজম ৫৩:৬২)।
- **রুকু চিহ্ন:** মুসহাফে রুকুর চিহ্ন (۩) থাকলে সেখানে থামা সুন্নাত, কিন্তু রুকু করা জরুরি নয়।
### **৩. রুকু না করলে কী হবে?**
- নামাযে ইচ্ছাকৃত রুকু বাদ দিলে নামায বাতিল।
- ভুলে বাদ পড়লে সিজদায়ে সাহু (ভুলের সিজদা) দিতে হবে।
### **৪. বিশেষ ক্ষেত্রে রুকুর ছাড়**
- শারীরিক অক্ষমতায় রুকু করতে না পারলে ইশারায় রুকু করা যায় (সূরা আল-বাকারাহ ২:২৮৬)।
### **৫. রুকুর ফজিলত**
- রাসূল (ﷺ) বলেছেন,
> "যে ব্যক্তি রুকু ও সিজদা ঠিকভাবে আদায় করে, তার নামায পূর্ণাঙ্গ হয়।"
**(সহীহ বুখারী, হাদীস ৭৯৩)**
### **সারাংশ**
- নামাযে রুকু ফরজ, তিলাওয়াতে রুকু নেই (সিজদায়ে তিলাওয়াত আছে)।
- রুকুতে স্থিরতা ও তাসবিহ পড়া আবশ্যক।
- অক্ষম হলে ইশারায় রুকু করা যায়।
আপনার কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে আরও জানার থাকলে জানাতে পারেন!
Comments
Post a Comment